বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ হওয়া প্রথম ব্যক্তি আবু সাঈদকে ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যা এবং ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানকে নিয়ে কটূক্তি ও সরকারকে সাংবিধানিকভাবে ভিত্তিহীন বলেও কটুক্তি করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাপসী তাবাসসুম ঊর্মি।
তাপসী তাবাসসুম উর্মি বর্তমানে ময়মনসিংহ সদরের কাশর জেলরোড এলাকার বাসিন্দা । কাশর জেলরোড ১৬৭/১ বাসায় পরিবার সহ থাকেন তিনি। তাদের আদি নিবাস নেত্রকোণা জেলার পূর্বধলা উপজেলার সদর ইউনিয়নের নসিবপুর গ্রামে।
ঊর্মি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্রী ছিলেন এবং সেখান থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে ৪০তম বিসিএসের মাধ্যমে ২০২২ সালের ৮ ডিসেম্বর লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার হিসেবে যোগ দেন। ঊর্মির পিতা- মো. ইসমাইল হোসেন ময়মনসিংহ নগরীর আনন্দ মোহন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। পরবর্তীতে মুক্তাগাছা শহীদ স্মৃতি কলেজের সাবেক ভাইস প্রিন্সিপাল এবং নেত্রকোনার একটি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সরকারি চাকুরি থেকে অবসর গ্রহণের পর বর্তমানে ময়মনসিংহ নগরীর শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম কলেজে খন্ডকালীন ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। ঊর্মির মা নাসরিন জাহান বর্তমানে ময়মনসিংহের হাজী কাশেম আলী মহিলা ডিগ্রি কলেজের গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
উর্মির বাসায় গিয়ে ভাড়াটিয়াদের সাথে কথা বলে জানা যায় তারা কেউই এখন বাসায় নেই। এছাড়া ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে তেমন কোন তথ্য পাওয়া যায় নি, তারা উর্মিদের ব্যাপারে কোনো কিছু জানাতে অনিহা প্রকাশ করেছেন।
উর্মির প্রতিবেশী খোদেজা বেগম (৫৬) জানায়, ছোটবেলা থেকেই উর্মি খুবই ভালো ছাত্রী ছিলেন। কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কেন এমন বিবৃতি দিয়েছেন তা তাদের অজানা। তার এরকম মন্তব্যের ঘোর বিরোধীতা করেছেন তিনি ।
নাসির উদ্দিন (৬২) নামের একজন বলেন, উর্মিকে আমরা ছোট থেকেই চিনি। উর্মি এমন একটা কাজ করবে তা তিনি কখনো কল্পনাতেও আনেনি। তিনি বলেন, উর্মির বাবা আওয়ামীপন্থী ছিলেন তাই বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম মন্তব্য করবে এটা তিনি আশা করেন নি ।
মোর্শেদা খাতুন(৫০) জানায়, উর্মি চাকুরী রক্ষার্থে এসব করতে পারেন। তিনি আরো বলেন হয়তোবা পারিপার্শ্বিক চাপে পড়ে বা দলীয় মনোভাবে উর্মি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন পোষ্ট করতে পারেন।
রবিন(২২) বলেন, উর্মি এখানে থাকা কালীন কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না । বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া কালীন সময়ে ছাত্র রাজনীতি বা চাকুরী পাওয়ার পরে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন কি না এটাও তার অজানা । তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরকম পোস্ট করা তার উচিত হয়নি ।
তবে উর্মির চাকুরিচ্যুত হওয়াতে প্রতিবেশীরা মর্মাহত হয়েছেন ঠিকই কিন্তু তারা বলেন, উর্মির উচিত ছিলো আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের দালালি না করে, দলীয় স্বার্থ ত্যাগ করে দেশের মানুষের স্বার্থে দেশের স্বার্থে নিজেকে নিয়োজিত করা।
এলাকাবাসী উর্মির এমন মন্তব্যের তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছেন।
মন্তব্য করুন