কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজার হতে পৌরসভার একাংশ, আগানগর, শ্রীনগর, সাদেকপুর ও শিমুলকান্দি এই চার ইউনিয়ন কেন্দ্রিক একটি পরিকল্পিত বেড়িবাঁধ পালটে দিতে পারে ভৈরব উপজেলার উন্নয়নের চিত্র। যার ইতিবাচক বিশাল ভূমিকা থাকবে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি উন্নয়নে।
ভৈরব উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের মধ্যে আগানগর, শ্রীনগর, সাদেকপুর ও শিমুলকান্দি এই চারটি ইউনিয়ন প্রায় নদী বেষ্টিত এলাকা বলা যায়। এই চার ইউনিয়নের জনগণের দীর্ঘদিনের দাবি “ভৈরব বাজার হতে সাদেকপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর পর্যন্ত একটি পরিকল্পিত বেড়িবাঁধ” যা বাস্তবায়নের আশ্বাস ইতিপূর্বে বিভিন্ন রাজনীতিবিদ দিয়ে আসলেও ক্ষমতা লাভের পর কেউ-ই আর সে কথা রাখেননি।
এখন আসুন দেখি কী রকম পরিকল্পিত বেড়িবাঁধ প্রয়োজন এবং তা করা হলে পরবর্তী ভৈরবের চিত্রটি কেমন হতে পারে, যারফলে সামগ্রিক দেশ লাভবান হবে!
ভৈরব বাজার হতে মেঘনার পাড় দিয়ে কালীপুরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে কোদালকাটি হয়ে ছাতিয়ানতলা এবং সেখান থেকে মেঘনার পাড় দিয়ে লুন্দিয়া-খলাপাড়া হয়ে মেন্দিপুর পর্যন্ত সুপ্রশস্ত রাস্তাসহ একটি পরিকল্পিত বেড়িবাঁধ করা হলে, একইসাথে গুরুত্বপূর্ণ খালগুলোতে সুইস গেইট এবং ব্রিজ নির্মাণ করা হলে পুরো ভৈরবের চিত্র পালটে যাবে, সেইসাথে নদীভাঙনও রোধ হবে।
বেড়িবাঁধের ভেতরে তখন হবে এক বিশাল হাওর, যা “হাওর পূর্বাঞ্চল” অথবা পূর্বের বিলুপ্তপ্রায় “জোয়ানশাহী হাওর” নামেও তা পরিচিতি লাভ করতে পারে।
বেড়িবাঁধের ফলে হাজার হাজার হেক্টর ধান উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে নিঃসন্দেহে। বেড়িবাঁধকে কেন্দ্র করে সারি সারি বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে গড়ে তোলা যাবে সবুজ বনায়ন, যা কিনা হতে পারে পর্যটকদের জন্য একটি মনোরম পর্যটন এলাকা। বেড়িবাঁধ হওয়ার পর সড়কপথের পাশাপাশি সহজ নৌচলাচল পথ থাকায় অত্র এলাকায় বৃহৎ শিল্পায়ন গড়ে তোলা যাবে, যারফলে সৃষ্টি হবে ব্যাপক কর্মসংস্থানের এবং এতে করে দেশের প্রবৃদ্ধিও সমৃদ্ধ হবে চমৎকারভাবে।
এইরকম বহুল উন্নয়নমুলক সম্ভাবনা বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সুপ্রশস্থ রাস্তা কাম একটি পরিকল্পিত বেড়িবাঁধের। এই বেড়িবাঁধের মাধ্যমে পুরো ভৈরব উপজেলায় ঐতিহাসিক উন্নয়নের মাইলফলক রচিত হবে নিঃসন্দেহে।
ভৈরবের আমুল পরিবর্তনের স্বার্থে এবং অত্র এলাকার অবকাঠামো উন্নয়নসহ উন্নত জনজীবন মান নিশ্চিত করতে “ভৈরব বাজার হতে সাদেকপুর ইউনিয়নের মেন্দিপুর পর্যন্ত রাস্তা কাম বেড়িবাঁধ” প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করা অত্যন্ত জরুরি এবং সে লক্ষ্যে দ্রুত যথাযথ পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে প্রত্যাশা করি।
এম.এ. বাকী বিল্লাহ
লেখক, সংগঠক ও রাজনীতি বিশ্লেষক।
মন্তব্য করুন