প্রকাশের সময়: ১:৫৭ পিএম । শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ প্রিন্টের তারিখঃ ৪:১০ এম । বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫

খেজুরের গুড় তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে সিরাজগঞ্জের গাছিরা 

মোঃ মামুন সেখ স্টাফ রিপোর্টার, সিরাজগঞ্জ চেতনা ২৪ নিউজ ।।

সিরাজগঞ্জ: শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪ইং (চেতনা ২৪ নিউজ) শীত যত বাড়ছে, খেজুরের গুড়ের চাহিদাও ততই বাড়ছে। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য শীত মৌসুমে গ্রামাঞ্চলের ঘরে ঘরে খেজুর রস ও গুড় দিয়ে তৈরি হয় নানা রকমের বাহারি পিঠাপুলি ও পায়েস। তাই বাণিজ্যিকভাবেও খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরি করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তাড়াশ উপজেলার গাছিরা।

 

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলাকে সাধারণত রসের রাজ্য বা গুড়ের রাজ্য হিসেবে বলা হয়ে থাকে। কারণ তাড়াশ উপজেলায় প্রতি বছরে প্রচুর পরিমাণে রস সংগ্রহ করা করে থাকে। আর সেই রস থেকেই তাড়াশের সুস্বাদু গুড় তৈরি করা হয়। এখন শুধু সিরাজগঞ্জ জেলাতেই নয় বরং আশেপাশের জেলা গুলোতেও তাড়াশের গুড় সরবরাহ করা হচ্ছে।

 

সরেজমিনে গিয়ে তাড়াশ উপজেলার গিছু গ্রাম পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায় যে, তাদের গ্রাম গুলোতে প্রচুর পরিমানে খেজুর গাছ রয়েছে। তাদের এলাকার রাস্তার পাশে, পুকুরের ধারে, আবাদি জমির আল দিয়ে এমনকি বাড়ির পাশের ফাঁকা জায়গা গুলোতেও খেজুর গাছ রোপন করেছেন। এমনকি প্রতিটি গাছেই লাগানো হয়েছে হাঁড়ি আর সেই হাঁড়ির মধ্যেই জমা হচ্ছে খেজুরের গাঁ থেকে বেয়ে পড়া রস আর সেটাকেই বলা হচ্ছে খেজুরের রস।

 

তাড়াশ উপজেলার দেশিগ্রামের রস সংগ্রহকারী আব্দুল মান্নান জানান, এই এলাকার মাটি ভালো হওয়ার ফলে এই এলাকার রসটা প্রচুর পরিমানে মিষ্টি হয়ে থাকে। কিন্তু এই রস গুলো সংগ্রহ করা প্রচুর কষ্টকর কাজ। প্রথম অবস্থায় শীতের শুরুতে আমরা গাছগুলোর মাথায় থাকা শক্ত পাতা গুলো ছাটাই করে পরিস্কার করি এবং তার পরেই সেই পরিস্কারকৃত স্থানে এক ধরনের দা ব্যবহার করে সেখানে কাটা হয় এবং রস সংগ্রহ করার জন্য এক ধরনের নল ব্যবহার করা৷ আর রস সাধারণত শীত যত বেশি হয় রসের পরিমান ও তত বেশি হয় এবং ঠান্ডার সময় রস ভালো থাকে তার জন্যই আমরা রস রাতে সংগ্রহ করে থাকি৷ প্রত্যেকদিন বিকেল বেলা আমরা প্রতিটি গাছের সাথে হাঁড়ি লাগিয়ে দেয়। আর সেই হাঁড়িতেই সারারাত জমা হতে থাকে খেজুরের রস। রসটি অনেক ভোরে সংগ্রহ করা হয় নাহলে আবার রসটি নষ্ট হয়ে যায়। তারপরে কিছু কিছু গাছিরা নিজেই রস থেকে গুড় তৈরি করে এবং কেউ কেউ লিটার দরে বিক্রি করে দেয়।

 

একই গ্রামের গুড় তৈরিকারী মোয়াজ্জেম আলী বলেন, আমি গাছিদের থেকে ২৫-৩০ টাকা দরে রস সংগ্রহ করে থাকি। তারপর সেটা চুলায় জাল করে রস থেকে গুড় তৈরি করে থাকি। আমাদের এখানে দু ধরনের গুড় তৈরি করা হয় ঝোলা গুড় ও পাটালি গুড়। আর এটা প্রতি কেজি ১৪০-৫০ টাকা দরে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। আর সেই পাইকারদের মাধ্যমেই চলে যায় দেশের নানা প্রান্তে।

 

তাড়াশ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ উপজেলায় প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার খেজুর গাছ রয়েছে। এ গাছ থেকে প্রতি বছর প্রায় ২ হাজার ৫০০ মে.টন রস সংগ্রহ হয়ে থাকে। আর ওই রস থেকে তৈরি হয় প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ মে.টন সুস্বাদু খেজুর গুড়।

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ- ফরিদুজ্জামান শান্ত, মোবাইলঃ- +৮৮০১৮৫২-৩২৬২৪০ বার্তা কক্ষঃ- i) chetona24news@gmail.com  ii) add.chetona24news@gmail.com  iii) c24n.news@gmail.com . কপিরাইট © চেতনা ২৪ নিউজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন