
ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠের ‘শিক্ষালোক’ প্রকল্প শিক্ষার্থীদের জন্য এক অভিনব বাস্তবভিত্তিক শিক্ষার উদ্যোগ। শিক্ষার্থীদের কে সামাজিক সচেতনতা ও প্রাত্যহিক জীবনে করনীয় সম্পর্কে অবগত করার লক্ষ্যেই গড়ে উঠেছে শিক্ষালোক প্রকল্প ।
দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পাঠ্যবইয়ের গণ্ডি পেরিয়ে জীবনের বাস্তব প্রয়োগে যুক্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠ বা Mobile School । এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটি চালু করেছে এক ব্যতিক্রমধর্মী প্রকল্প — “শিক্ষালোক” ।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে ভ্রাম্যমান শিক্ষকরা দেশের প্রান্তিক ও অনুন্নত এলাকায় পৌঁছে, সেখানকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাস্তব জীবন ভিত্তিক সচেতনতা ও প্রয়োজনীয় দক্ষতা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করছে।
প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রশাসন পরিচালক মিয়াদ আহমেদ শুভ বলেন,“একটা দেশের হাজারটা সমস্যার উৎস ঐ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা। দেশের প্রতিটি প্রান্তে শিশু, কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী, বৃদ্ধসহ সকল স্তরের মানুষের মধ্যে সত্যিকারের শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে আমাদের ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”
প্রকল্পের প্রথম ধাপ “শিক্ষালোক ১.০(ওয়ান পয়েন্ট জিরো)” ইতোমধ্যেই ঢাকা বিভাগের চারটি অঞ্চল (ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুর) এর প্রায় ১৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ও সচেতনতামূলক সেশন ও কর্মশালার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে চারটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দক্ষ করে তোলা হচ্ছে:
১) হিটওয়েভ সচেতনতা:-
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে গরমের প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় শারীরিক সুরক্ষা ও করণীয় বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় ।
২) ধর্ষণ প্রতিরোধ ও আত্মরক্ষা:-
নারী ও কিশোরীদের নিরাপত্তা, আত্মরক্ষার কৌশল, এবং প্রয়োজনীয় আইনি সচেতনতা প্রদান করা হয়।
৩) সাইবার বুলিং সচেতনতা:-
ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিরাপদ থাকার কৌশল এবং সাইবার বুলিংয়ের বিরুদ্ধে সঠিক প্রতিক্রিয়া জানাতে শেখানো হয়।
৪) ক্যারিয়ার পরিকল্পনা ও দিকনির্দেশনা:-
ভবিষ্যতের জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ, পরিকল্পনা প্রণয়ন ও দক্ষতা অর্জনের বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
এই প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষে, ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠের হেড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন – মো: আশরাফুজ্জামান সজীব ।ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠের ডিরেক্টর – লামিয়া লিয়া।
ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠের হেড অফ কানেক্ট – মাহিমা ।ভ্রাম্যমাণ বিদ্যাপীঠের হেড অফ পিপল অপ্স – জান্নাতুল সুহাদা ।
এছাড়াও তাদের সঙ্গে একযোগে নিরলসভাবে কাজ করছেন প্রকল্পটির প্রায় ২৫০ জন নিবেদিতপ্রাণ স্বেচ্ছাসেবক। যারা চারটি অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধির মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে অবদান রাখছেন।
“শিক্ষালোক” কেবল একটি প্রকল্প নয়, একটি সামাজিক আন্দোলন । এটি কেবল একটি শিক্ষামূলক প্রকল্প নয়, বরং এটি একটি সামাজিক আন্দোলন, যা তরুণ প্রজন্মকে জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত করছে। নেতৃত্বের গুণাবলি, দায়িত্বশীলতা ও সামাজিক সচেতনতা গড়ে তুলে, এই প্রকল্প আগামী প্রজন্মকে দেশগঠনের একজন সক্রিয় অংশীদার করে তুলছে ।