প্রকাশের সময়: ২:৩৪ পিএম । শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫ প্রিন্টের তারিখঃ ১২:৫৭ এম । বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫

নবগঠিত ময়মনসিংহ উত্তর ছাত্রদলের সভাপতিকে নিয়ে নানা বিতর্ক 

ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি, চেতনা ২৪ নিউজ ।।

ময়মনসিংহে নবগঠিত উত্তর জেলা ছাত্রদলের কমিটির সভাপতির পদ নিয়ে নানা বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে একই দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা কেন্দ্রে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন সভাপতির বিরুদ্ধে। সমালোচনা চলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।

 

 

জানা যায়, ময়মনসিংহ উত্তর ছাত্রদলের কমিটির সভাপতি নুরুজ্জামান সোহেল গেল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থীর পক্ষে নির্বাচনে প্রচারণায় ছিলেন। এছাড়া তার পড়ালেখা নিউ রয়েছে প্রশ্ন। ফলে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ উপযুক্ত নেতাকে সভাপতি পদে দ্বায়িত্ব দেওয়া প্রয়োজন দাবি উঠেছে দলীয় নেতাকর্মীদের পক্ষ থেকে।

 

 

আওয়ামী লীগের প্রচারণায় নুরুজ্জামান সোহেলের অংশগ্রহণের পুরাতন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সোমবার (২ জুন) ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত অনেকের সাথে একটি কক্ষে নৌকার প্রার্থীর প্রচারণায় ছিল নুরুজ্জামান সোহেল। কক্ষে আওয়ামী লীগ সমর্থিতদের সঙ্গে বসে আছেন নুরুজ্জামান সোহেল। উপরে দেয়ালে টানানো তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি। মোবাইল দিয়ে একজন সোহেলকে ভিডিও করার সময়, পাশ থেকে আরেকজন বলতে থাকেন, এখানে সোহেল আসছে, এটাই সর্বনাশ। এসময় একজনকে বলতে শোনা যায়, ছবি তুলেন কেন? এমতাবস্থায় ভিডিও করা বন্ধ করা হয়।

 

 

ছড়িয়ে পড়া ভিডিও নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

 

অনেকেই সামাজিক জীবনের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও পোস্টের কমেন্টে লিখেছেন, ছাত্রদল চলছে আওয়ামী লীগের দোষরের কাধে দায়িত্ব নিয়ে।

 

২৮ অক্টোবর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত

 

যেখানে সকল জাতীয়তাবাদের সৈনিকেরা মানবেতর জীবন-যাপন করছিল, সেখানে আওয়ামী নির্বাচনে প্রকাশ্যে নৌকা প্রচারণায় ব্যস্ত নুরুজ্জামান সোহেলকে বানানো হয় উত্তর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি। যা ছাত্রদলের জন্য লজ্জাজনক। আমরা অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি।

 

 

নবগঠিত উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ জানান ন, ত্যাগী নেতাদের উপযুক্ত পদ থেকে বঞ্চিত করে

 

আমাদের নবগঠিত কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এই কমিটি বিলুপ্ত করা খুবই জরুরি।

 

 

একই কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম রুবেল জানান, ছাত্রদলে নেতৃত্ব দেওয়া কোন নেতার যদি যতসামান্য পড়ালেখা থাকে, তাহলে এটি আমাদের জন্য লজ্জাজনক। এমন নেতার নেতৃত্ব মেনে নিতে অনেকেই দ্বিধাদ্বন্দে পড়েন। কারণ, যেসব নেতা কিংবা কর্মীরা পড়ালেখা চলমান রেখেছে, অনার্স-মাস্টার্স শেষ করেছে, তাদের পক্ষে এমন নেতার নেতৃত্ব মেনে নেওয়া কঠিন। ফলে নুরুজ্জামান সোহেলকে কমিটির সভাপতি পেয়ে অনেক নেতা-কর্মী ক্ষুব্ধ হয়েছেন।

 

 

একই কমিটির আরেকজন নেতা বলেন, নুরুজ্জামান সোহেল গৌরীপুরে অবস্থিত আর.কে উচ্চ বিদ্যালয়ে তিনবার এস.এস.সি পরীক্ষা দিয়েও পাস করতে পারেননি। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের নৌকার প্রার্থীর প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেছে। ছাত্রদলের প্রতি ভালোবাসা থাকলে কখনোই আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেওয়া সম্ভব হতো না। তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

 

 

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ মে সন্ধ্যায় ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম রাকিব তার ভেরিফায়েড ফেসবুকে জেলা দক্ষিণ, উত্তর, মহানগর, আনন্দ মোহন কলেজ ও কোতোয়ালি থানা ছাত্রদলের আংশিক কমিটির তালিকা প্রকাশ করেন। দলীয় প্যাডে সংগঠনের সভাপতি মো. রাকিবুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির স্বাক্ষর করেন। উত্তর জেলা ছাত্রদলের ১১ সদস্যবিশিষ্ট কমিটিতে নূরুজ্জামান সোহেল সভাপতি ও এ কে এম সুজা উদ্দিনকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এ ছাড়া কমিটির অন্যরা হলেন- সিনিয়র সহসভাপতি নাইমুর আরেফিন পাপন, সহসভাপতি মাসুদুর রহমান মাসুদ, মাসুদ আলম (মাসুদুল আলম মাসুদ), নাদিম সারোয়ার টিটু, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মনোয়ার, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইফুজ্জামান সরকার শাওন, রাসেল আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম রুবেল ও দপ্তর সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন তালুকদার।

 

 

এদিকে নবগঠিত ১১ সদস্যের উত্তর জেলা ছাত্রদল কমিটির মধ্যে ৬ জনই বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা গত ১৮ মে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বরাবর লিখিত আবেদন করেছেন। আবেদনের অনুলিপি বিএনপির নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় ছাত্রদল ময়মনসিংহ বিভাগীয় টিমের কাছে দেওয়া হয়েছে।

 

 

ওই আবেদনটি দেখা যায়, নবগঠিত উত্তর জেলা ছাত্রদলের পদধারী ছয়জন নেতা স্বাক্ষর করে কমিটির সভাপতির তথ্য গোপন করায় সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।

 

 

এতে স্বাক্ষর করেন- নবগঠিত উত্তর জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি নাইমুর আরেফিন পাপ, মাসুদুর রহমান মাসুদ, মাসুদ আলম (মাসুদুল আলম মাসুদ), নাদিম সারোয়ার টিটু, যুগ্ম সম্পাদক সাইফুজ্জামান সরকার শাওন ও সাংগঠনিক সম্পাদক শরিফুল আলম রুবেল।

 

 

এতে এসব নেতারা দাবি করেন, যারা জীবন বাজি রেখে আন্দোলন করেছে, সংগ্রাম করেছে, তাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। যাকে সভাপতি করা হয়েছে, তিনি নন মেট্রিক। এছাড়া তিনি নৌকার পক্ষে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে। যার ভিডিও ফুটেজে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা হয়।

 

 

তবে নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক এ কে এম সুজা উদ্দিনের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থীর সঙ্গে প্রচারণার অভিযোগ তুলতে না পারাসহ শিক্ষাগত যোগ্যতায়ও ঘাটতির অভিযোগ না তুলতে পারলেও তিনি চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সাংগঠনিক নিষ্ক্রিয়তার জন্য কারণ দর্শানোর নোটিশপ্রাপ্ত (শোকজ) পাওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়।

 

 

সভাপতি হিসেবে দ্বায়িত্ব পাওয়া নুরুজ্জামান সোহেলের বিষয়ে বলা হয়- রাষ্ট্রীয়, অবকাঠামো মেরামতে বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে ২৪ নম্বর দফায় উল্লেখ রয়েছে, বিরাজমান নৈরাজ্য দূর করে নিম্ন ও মধ্য পর্যায়ে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষা ক্ষেত্রে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। সভাপতির কোন ছাত্রত্ব নেই। ইতোমধ্যে জনমনে প্রশ্ন

সম্পাদক ও প্রকাশকঃ- ফরিদুজ্জামান শান্ত, মোবাইলঃ- +৮৮০১৮৫২-৩২৬২৪০ বার্তা কক্ষঃ- i) chetona24news@gmail.com  ii) add.chetona24news@gmail.com  iii) c24n.news@gmail.com . কপিরাইট © চেতনা ২৪ নিউজ সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত

প্রিন্ট করুন